নতুন বছরের প্রথম দিন
আজ। মনে পড়ে যাচ্ছে গত বছরের অনেক ঘটনা। তেমন ভালো কোন ঘটনা ছিলনা মোটেও আমার জন্য।
বছরের শুরুতেই আমার অনেক সাধের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের সমাপ্তি একতরফা ভাবেই। যার পরিনতি
ছিল খুবই ন্যাকারজনক নোংরা প্রক্রিয়ায়। এমএফসি তে তার শেষ কথা শুনে মর্মাহত হয়ে
সেখানেই আমার জিনিষ দুটাই ফেলে আসা এই ভেবে যে যেখানে সম্পর্কই রইলো না সেখানে কি
হবে এই বস্তুগত জিনিসগুলো দিয়ে। ফেরত নিতে হলে তো সবার আগে মনটাই ফেরত নিতে হয়, সেটা
কি ওই বোকাটার পক্ষে দেওয়া সম্ভব?? সম্পর্ক ভাঙার প্রতিক্রিয়ায় আমার আরো দীর্ঘদিনের অন্ধকার
জীবন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পরিসমাপ্তি। পরিনামে আবারো সেই সেন্টারে একমাসের স্বেচ্ছা
বন্দী জীবন বরন করে চরম অসহায়ত্তের মধ্য দিয়ে দিন কাটানো। সেখানে থাকা অবস্থায় আমার
ব্যবসায়িক দুইলক্ষ টাকা ছিনতাই হয়ে যাওয়া, এরপর বাবার পিড়াপীড়িতে উন্নত চিকিৎসার
জন্য দেশের বাইরে গিয়ে আমার হার্টে মারাত্মক সমস্যা নির্ণয় হওয়ার ভিতর দিয়ে
আমার ভবিষ্যৎ শারীরিক অবস্থা নির্ধারিত হয়ে যায়। এরপর আবারো মে মাসে আমার প্রতিষ্ঠান
চুরি হয়ে নগদ আশি হাজার টাকা সহ প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি এবং এক ব্যবসায়িক অংশীদার পাঁচ লক্ষ টাকা
নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়া।
একাধিক বার দুর্ঘটনায় আমার মৃত্যুর কাছে গিয়ে ফিরে আসা, সাথে সেই সংঘাতময় প্রতিটি
দিন পারিবারিক জীবনে। সবমিলিয়ে প্রতিমুহূর্তে মোকাবেলা করতে হয়েছে প্রতিকুল পরিবেশ,
সহ্য করতে হয়েছে চরম অপমান আর অবহেলা। এতসব ঘটনা একে একে ঘটতে থাকে আর আমি ব্যঙ্গ হেসে নিজেকে সান্ত্বনা দিতাম এই বলে যে এসব আমার প্রাপ্য। একের পর
এক অনাকাক্ষিত ঘটনায় আমার চরম
হতাশার মধ্যে নিমজ্জিত হওয়ার পরেও আমি ভেঙ্গে পরিনি মোটেও। শারীরিক, মানসিক, আর্থিক আর পারিবারিক
সবদিকেই চরম বিশৃঙ্খলা ও অবনতি বিরাজ করে। চারিদিক সামাল দিতে আমাকে সীমাহীন
হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া আরও অনেক ঘটনা আছে যেগুলো মোটেও সুখকর নয়। তবে দুঃখ শুধু
এটাই আমার এই চরম দুঃসময়েও আমার পাশে থেকে আমাকে একটু সাহস, সান্ত্বনা বা মানসিক
সমর্থন দেওয়ার জন্য কাউকে পাইনি। অন্য সবার মতো এমন প্রাপ্তি
আশা করাটা কি আমার জন্য খুবই অন্যায়? হয়তো আমাকে এসব মানায় না। কিন্তু আমিতো কখনো কারো দুঃসময়ে কাউকে ছেড়ে যাইনি
তবে কেন আমার বেলায় এমন হয়? তবুও সবকিছুকে নিয়তি মনে করে আবার উঠে দাঁড়ানোর
চেষ্টা করে যাচ্ছি একা একাই। এর ভিতরে বাবা-মায়ের অসুস্থতা আমাকে আরও দিশেহারা করে
তুলে। সর্বশেষ ঘটনা ঘটে গত ২৭শে ডিসেম্বর মায়ের খাস্তগির স্কুলের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায়
মারাত্মক আহত হওয়া। জানিনা এই নতুন বছর আমার জন্য আরও কতো বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন
করে, যদিও জানি আর কোন ভালো আমার জীবনে আসবে না কোনদিন। আর আমিও জীবনের কাছে ভালো কোন প্রত্যাশা করিনা। আজ এই বছর শুরুর লগ্নে আমি
কাউকে দায়ী করতে চাইনা আমার কোনকিছুর জন্য। আমার সবকিছুর জন্য আমি নিজেই দায়ী, কারন আমি সেরকম
পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি। সবাই ভালো
থাকুক যার যার প্রত্যাশা মতোই, শুধু এই কামনা করি মনেপ্রাণে। ভালো থাকুক আমার ভালোবাসা।
No comments:
Post a Comment