বেশ কিছু দিন যাবত টের পাচ্ছি বুকের মধ্যে মেঘের মতো একটি কষ্ট ঘন হয়ে
উঠেছে, মাঝে মাঝে তা অসহ্য হয়। মনে হয় কোন বুনো হাতির দল যেন কোন সুনসান অরণ্য
তছনছ করে দিচ্ছে, পাঁজর ভেঙ্গে আসে তখন। চোখের পাতায় এক বিন্দু শিশিরের ভিজে উঠা
টের পেয়ে গড়িয়ে পড়ার আগেই তা মুছে ফেলি। কিন্তু কেন কাঁদবো? কার জন্য কাঁদবো? কোন
দুঃখে কাঁদবো? নিত্য নৈমিত্তিক কাজের মধ্যে সময় চলে যায়। কিন্তু কমে না কষ্ট,
খুঁজে পাইনা সে কষ্টের কোন যুক্তি। অথচ টের পাচ্ছি পলি জমে জমে ক্রমে জেগে উঠা
চরের মতো ওই কষ্ট আমার নিরেট সুখের এই জীবন সমুদ্রটিতে দখল নিতে চাইছে। বুকের ভিতর
অসহায় ইচ্ছে আর্তনাদ করে উঠে। কেউ জানে না একজন মেয়ের ক্ষমতা কতো অপার। তুচ্ছ
বেদনাকেও তারা কি অসীম সৌন্দর্যে আলোকিত করে সাজাতে জানে। ব্যাথার অতীত কিছু অনুভুতি
তারা লালন করে অথৈ আবেগ দিয়ে, অথবা প্রচণ্ড দুঃসাহসে। ফর্সা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে
থাকি তবুও মনে হয় মেঘ কাটেনি। গুমোট ভাব রয়েছে দম আটকে আসার মতো। প্রত্যক্ষ শুধু
নয় পরোক্ষ দায়গুলোও এসময় বিবেকের মধ্যে প্রকট হয়ে ওঠে। বহুদিনের ভুলে থাকা ধুসরিত
প্রতিকৃতিখানির পাশে ওকে যেন জ্বালিয়ে দেয় তীব্র শিখার আলো। আলো নেই কেন? বুকের
ভেতর ককিয়ে উঠে তার আর্তনাদ। অতিক্রান্ত সবুজ পথ দ্রুতগামি ট্রেনের মতো অসহ্য
ছুটোছুটি করতে থাকে অচেনা ষ্টেশনে অসহায় যেন কোন যাত্রীর সম্মুখে। মুক্তি ও
বন্দিত্বের আস্বাদ কেমন একাকার হয়ে উঠে বোধের গভীরে। তবুও এ থেকে পরিত্রান চাই না।
কারণটি বোধহয় এ বন্দিত্ব নয় বলে, নয় বিকারও। বোধহয় এরই নাম জীবন। আমি শুধু ভাবি
সমস্ত দায় মেনে, সব অপরাগতা স্বীকার করে আরও একটি তমসাঘন সন্ধ্যায় অবগাহন, আরও
একটি সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় বোধহয় বেঁচে থাকার স্বাভাবিক প্ররোচনা। ভালো থাকুক আমার
ভালোবাসা।
No comments:
Post a Comment