অনন্ত, মেহেদি পাতা দেখেছো নিশ্চয়? উপরে
সবুজ, ভেতরে রক্তাক্ত ক্ষত-বিক্ষত। নিজেকে আজকাল বড়ো বেশী মেহেদি পাতার মতো মনে হয়
কেন? উপরে আমি অথচ ভিতরে কষ্টের যন্ত্রণার এমন সব বড়ো বড়ো গর্ত যে, তার সামনে
দাঁড়াতে নিজেরই ভয় হয়। তুমি কেমন আছো, বিরক্ত হচ্ছ না তো? ভালোবাসা যে মানুষকে
অসহায়ও করে তুলতে পারে, সেদিন তোমায় দেখার আগ পর্যন্ত আমার জানা ছিলো না। তোমার
উদ্দাম ভালোবাসার দূতি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলেছে আমার ভিতর, আমার বাহির,
আমার হাতে গড়া আমার পৃথিবী। অনন্ত যেই মেয়ে সুখী হবে বলে ভালোবাসার পূর্ণ চন্দ্র গিলে
খেয়ে ভেজা মেঘের মতো উড়তে উড়তে চলে গেলো, আজ শুন্য অনন্তকে আরও শুন্য করে দিয়ে-
তার মুখে এসব কথা মানায় না- আমি জানি। কিন্তু আমি আর এভাবে এমন করে পারছি না, আমার
চারদিকের দেয়াল জুড়ে থই থই করে আমার স্বপ্ন খুনের রক্ত। উদাস দুপুরে বাতাসে শিস
দেয় তোমার সেই ভালোবাসা, পায়ে পায়ে ঘুরে ফেরে ছায়ার মতোন তোমার স্মৃতি। আমি
আগলাতেও পারি না আবার ফেলতেও পারি না। সুখী হতে চেয়ে এখন দাঁড়িয়ে আমি, একলা আমি
কষ্টের তুসার পাহাড়ে। অনন্ত তোমার সামনে দাঁড়ানোর কোন যোগ্যতাই আজ আমার অবশিষ্ট
নেই। তবুও তুমি একদিন বলেছিলে ভেজা মেঘের মতো সবুজ আকাশে উড়তে উড়তে জীবনের সুতোয়
যদি টান পরে কখনো চলে এসো, চলে এসো বুক পেতে দেবো। আকাশ দেবো আর হাসনা হেনা
ফুটাবো। সুতোয় আমার টান পড়েছে অনন্ত তাই আজ আমার সবকিছু, আমার একরোখা জেদ,
তুমিহীনা অনেক স্বপ্ন সব, সবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে তোমার সামনে আমি নতজানু। আমায়
তোমাকে আর একবার ভিক্ষে দাও, কথা দিচ্ছি তোমার অমর্যাদা হবে না কোনোদিন। আমি জানি
এখন তুমি একলা পাষাণ কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়াও, প্রচণ্ড এক অভিমানে ক্ষনে ক্ষনে গর্জে
উঠে অগ্নিগিরি। কেউ জানে না কিন্তু আমি জানি কেন তোমার মনের মাঝে মন থাকে না, ঘরের
মাঝে ঘর থাকে না। কেউ জানে না, আমি জানি কেন তুমি এমন করে কষ্ট পেলে সব হারিয়ে
বুকের তলের চিতানলে- কেন তুমি নষ্ট হলে? কার বিহনে চুপি চুপি, ধীরে ধীরে- কেউ জানে
না, আমি জানি- হ্যাঁ আমিই জানি। আমি আসছি তোমার কাছে, আর কিছু না দাও। অন্তত
শাস্তিটুকু দিও। ভালো থেকো আমার ভালোবাসা। (সংকলিত)
No comments:
Post a Comment