মানুষ অনেক শখ করে খাঁচায় পাখি পোষে, নিজের
সুখ-দুঃখকে পাখির খাঁচার পাশে দাঁড়িয়ে কিছুটা বোঝাতে চায় পাখিকে। নিজের শখের জন্য
পাখিটিকে কখনও উড়ার সুযোগ দেয় না আর আকাশকে সামনে রেখেও পাখি ভুলে যায় তার উড়ার
সমস্ত কৌশল। আবার যখন মানুষ খুব বেশী আনন্দে থাকে তখন পাখিকে তাদের মনের সুখে
বনে-জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসে। কিন্তু পথহারা পাখি অনেক আগেই ডানা থাকা সত্ত্বেও তা
বিসর্জন দিয়েছে। হয়তো কোন বড়ো পাখির আক্রমনে কিংবা ঝড়ের তাণ্ডবে পোষা পাখি প্রান
হারায়। মানুষের জীবনও এই রকমই। যে একা চলতে প্রস্তুত তাকে স্বপ্ন দেখায় একদল স্বপ্নবিলাসী মানুষ। তখন স্বাধীনচেতা মানুষটি নিজের স্বাধীনতা ছেড়ে স্বেচ্ছায়
পরাধীনতার কাছে আত্মসমর্পণ করে। ধীরে ধীরে সে তার সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলে আর স্বপ্নবিলাসী মানুষটির উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে শুরু করে। নিজের সবকিছু ত্যাগ করে সর্বদা
সেই স্বপ্ন দেখানো স্বপ্নবিলাসী মানুষটির সাথে স্বপ্ন পুরনের স্বপ্নে বিভোর থাকে। আর
এদিকে যখন ঘুমের ঘোর কেটে যায় তখন স্বপ্নের অবসান ঘটে, স্বপ্নবিলাসী মানুষটিও ভুলে
যায় যে সে কাউকে স্বপ্ন দেখাতো। তাই বাস্তবে খুঁজে নেয় এমন কাউকে যে সাদাকালো
স্বপ্নের চেয়েও আরও বেশী রঙিন। স্বপ্নবিলাসী আবার নতুন কাউকে স্বপ্ন দেখানোতে
মশগুল হয়ে পড়ে আর সেই স্বপ্ন দেখা মানুষটি পথ হারিয়ে ফেলে। আর এদিকে পথহারা
মানুষটি বেঁচে থাকার কোন অর্থ খুঁজে পায় না। কেউবা ডাঙ্গায় ঝোলে, কেউবা জলে ভাসে
আবার কেউবা কোন অন্ধকারে হারিয়ে যায়। কিন্তু এখানে দোষ কার বেশী? যে স্বপ্ন দেখে
নাকি যে স্বপ্ন দেখায়? তাই শখ করে কেউ পাখি পোষার মতো কোন খাঁচায় মানুষের মন নামক
পাখিটিকে বন্দী করতে দেওয়া উচিৎ নয়। কারন এমন স্বপ্নবিলাসী মানুষরা কখনও একটি
পথভ্রষ্টতার দায়ভার নেয় না। ভালো থাকুক আমার ভালোবাসা।
No comments:
Post a Comment