একজন মানুষ ছোট বেলায় যখন কথা বলতে পারতো না,
হাঁটতে পারতো না তখন মা-বাবা তাকে যত্ন সহকারে কথা বলা আর হাঁটতে শেখায়। এই হাঁটতে
গিয়ে অনেক সময় পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়ে কান্না করে। মা-বাবা পরম স্নেহ আর ভালোবাসায়
কোলে তুলে আদরে করে সেই ব্যাথা ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। সবার শরীরে ছোট বেলার একটা
ক্ষত দাগ এখনও রয়েছে যা চিরদিন শরীরে থেকে যায়। যখন নিজে নিজে হাঁটতে শেখে তখন যদি
পড়ে গিয়ে ব্যাথাও পায়, তখন আর কান্না করে না। তেমনি মানুষের জীবনে যখন ভালোবাসা
আসে, তখন সে এক সুখের অধরায় তাকে নিয়ে পথ চলতে শুরু করে। আর এই পথ চলতে গিয়ে তার
ভালোবাসার মানুষটি যখন নতুনের হাত ধরে অন্য পথের সন্ধানে চলে যায়, তখন তার মনের
সুখের অধরায় আঁধার নেমে আসে। যেখানে তার ভালোবাসার মানুষটি তাকে ছেড়ে চলে যায়,
সেখানেই মনে আঘাত পেয়ে অনেক কান্না করে। তখন তাকে পরম আদর ও মমত্ব দিয়ে সান্ত্বনা
দেওয়ার কেউ থাকে না, সে ভাবে তাকে ছাড়া পথ চলতে পারবে না। চরম অসহায়ত্ব আর
বিষণ্ণতা ঘিরে ধরে থাকে, চারদিকের সবকিছুই ক্রমশ বিষময় হয়ে উঠে তার কাছে। কেউ কেউ
জীবনের কাছে করুনভাবে আত্মসমর্পণ করে শেষ সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে
থাকে। কিন্তু একটা কথা আছে, জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না। তাই সেখান থেকে সে একা
পথ চলতে শুরু করে, আস্তে আস্তে একা একা পথ চলতে শিখে যায়। প্রায়ই সেই ক্ষত দাগটা
তাকে অনেক যন্ত্রণা দেয়, কিন্তু আর কাঁদে না। কেউ তাকে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করলেও
সে আর আঘাত পায় না। কিন্তু সেই ক্ষত দাগটা রয়ে যায় চিরজীবন, যা দেখা যায় না কিন্তু
অনুভব করে যায় মুহূর্তে মুহূর্তে। আর যারা সেই আঘাত দেয় তারাই অন্যকে নিয়ে পথ চলতে
গিয়ে নিজেকে গর্বিত আর সুখী মনে করে সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেয়। একবারও তারা ভাবার
প্রয়োজন মনে করেনা যাকে এতো বড়ো আঘাত দিয়ে আসলো সে কি বিভীষিকাময় জীবন যাপন করছে
তাকে ছাড়া। ভাবে না তারাই একসময় সুন্দর সুন্দর বুলি আউরিয়ে চিরদিন পাশে থেকে সব
ভাগ করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি আর নিশ্চয়তা দিয়েছিল তাকে। বড়ো আজব এইসব মানুষ আর আজব
তাদের ভালোবাসা। ভালো থাকুক আমার ভালোবাসা।
No comments:
Post a Comment